জয়শংকর বলেন, “ভারত ও চীনের মধ্যে যে সমস্যাই থাকুক না কেন, আমার মনে হয় সেটা নিয়ে আমাদেরই কথা বলা উচিত।”
গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর থেকে ভারত-চীন সম্পর্কের বরফ এখনও গলেনি। বারবার লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের বলে দাবি করেছে বেজিং। যা নিয়ে বিরোধ বেড়েছে দিল্লির সঙ্গে। কিন্তু এই সীমান্ত সংঘাত একান্তই দুদেশের বিষয়। এই সমস্যা সমাধানে তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপ বা মতামতের প্রয়োজন নেই ভারতের। জাপানে কোয়াড গোষ্ঠীর এক বৈঠক থেকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও আমেরিকা মিলে তৈরি হয়েছে ‘কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ’বা কোয়াড গোষ্ঠী। সোমবার থেকে জাপানের টোকিওতে শুরু হয়েছে কোয়াড দেশগুলোর বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠক। এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর, আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। রয়েছেন জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া ও পেনি ওং।
সোমবার এই সম্মেলনের ফাঁকেই সাংবাদিকদের মুখমুখী হন জয়শংকর। সেখানেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয় ভারত ও চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে। উত্তরে জয়শংকর বলেন, “চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বরাবরই ভালো নয়। এখনও ভালো যাচ্ছে না।”
ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত সংঘাত নিয়ে একাধিকবার মুখ খুলেছে আমেরিকা। মতামত দিয়েছে রাশিয়া-সহ একাধিক দেশ। কিন্তু যেকোনও সমস্যার সমাধান পারস্পরিক আলোচনা ও কূটনৈতিক বৈঠকের মাধ্যমেই করাতে বিশ্বাসী দিল্লি। ভারত যথেষ্ট শক্তিশালী সমস্ত ইস্যু ও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্য।
এদিন সেকথা মনে দিয়েই জয়শংকর বলেন, “ভারত ও চিনের মধ্যে কোনও ইস্যু বা সমস্যা যাই থাকুক না কেন, আমার মনে হয় সেটা নিয়ে দুটো দেশেরই কথা বলা উচিত। যৌথভাবে তার সমাধানের পথ খুঁজে বের করা হবে আমাদের।”
এই বিষয়ে কোনও তৃতীয়পক্ষের না গলানো যে ভারতের একদমই পছন্দ নয় তা পরিষ্কার করে দিয়ে বিদেশমন্ত্রী বলেন, “এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা অন্য কারও দিকে তাকাচ্ছি না। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো এই বিষয়ে আগ্রহী কারণ আমরা দুটি বড় দেশ। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অবস্থা আন্তর্জাতিক নানা ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। কিন্তু আমাদের কারও মতামতের প্রয়োজন নেই।”
বলে রাখা ভালো, ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় মুখোমুখি হয় ভারত ও চিনের ফৌজ। রক্তক্ষয়ী সেই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। ১৯৭৫ সালে পর সেবারই প্রথম প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। কার্যত যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। অবশেষে পরিস্থিতি শান্ত করতে কয়েক দফা আলোচনায় বসে দুই দেশের সেনাবাহিনী। তাতে আঁচ কিছুটা কমলেও উত্তেজনা কমেনি। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক